রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর এ কথা জানান তারা।
গত বছরও চামড়ার দাম কমানো হয়েছিল। ওই বছর ট্যানারি ব্যবসায়ীরা রাজধানীতে প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। ঢাকার বাইরে এই দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা।
এছাড়া প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত মহিষের চামড়ার দাম ধরা হয় ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। সারা দেশে খাসির লবণযুক্ত চামড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা এবং বকরির চামড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকায় সংগ্রহ করা হয়।
বৈঠকের পর বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত বছরের প্রক্রিয়াজাত চামড়ার ৪০-৫০ ভাগ এখনও আমাদের কাছে রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারেও চামড়ার দাম কম। তাই এবার গত বছরের চেয়ে কম দামে চামড়া কিনতে হবে।”
চামড়া নিয়ে কাজ করা তিন সংগঠন আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে চামড়ার দাম ঘোষণা করবে বলেও জানান তিনি।
শাহীন আহমেদ বলেন, “আমরা মনে করেছিলাম এবার গরু সরবরাহ কম থাকবে, তাই ১০-১২ লাখের কম চামড়া পাওয়া যাবে। কিন্তু এখন গরুর বাজারে দেখা যাচ্ছে, পরিস্থিতি ভিন্ন। গরু কম হওয়ার আশঙ্কা নেই।”
বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে চামড়া খাতের ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সচিব মো. জয়নাল আবেদীনসহ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে চামড়া নিয়ে ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের সামনে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করে।
এতে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতি পাউন্ড চামড়ার মূল ছিলো ১০৬ দশমিক শূন্য ছয় সেন্ট। বর্তমানে এর দাম ৭১ সেন্ট।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোকে উদ্বৃত করে এতে বলা হয়, গত অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজত পণ্যের রপ্তানি আয় লক্ষ্যমাত্র অর্জন সম্ভব হয়নি। গত বছর ১৩৯৭ দশমিক ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১১৩০ দশমিক ৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি হয়েছে।
দেশের চামড়া শিল্প এক সংকটের মুখোমুখি উল্লেখ করে এতে বলা হয়, নতুন শিল্প নগরীতে কারখানা স্থাপনের উদ্দেশ্যে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ, কমপ্লায়েন্স কারখানা গড়ে তোলার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক চাপ, রপ্তানি বাজারে মূলহ্রাস, পরিবেশ বান্ধব নয় অজুহাতে বাংলাদেশি চামড়ায় প্রসিদ্ধ ব্র্যান্ডের অনীহা, ইউরো ও আরএনবি’র দরপতনে চামড়ার উদ্যোক্তারা হিমশিম খাচ্ছেন।
চামড়ার দাম বিষয়ে জানতে চাইলে মো. আব্দুল লতিফ বকসী বলেন, “সঠিক দামে যেন বিক্রি নিশ্চিত করতে পারে, সে বিষয়ে সরকারের একটা ভূমিকা থাকে। আমরা আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষণ করে চামড়ার বাজারের সাম্ভাব্য চিত্র তৈরি করি। তবে দাম নির্ধারণের কাজটি ব্যবসায়ীরাই করে। সরকার এটা করতে পারে না।”
২০১৩ সালে নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ব্যবসায়ীরা ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া কেনেন ৮৫-৯০ টাকায়। ঢাকার বাইরে তা কেনা হয় ৭৫-৮০ টাকায়।
আর প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়ার দাম ছিল ৫০-৫৫ টাকা। বকরির ৪০-৪৫ টাকা এবং মহিষের চামড়া ৪০-৪৫ টাকা।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস