মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয় দিয়ে চাকরি নিয়ে ফেঁসে গেলেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান।
বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা সাজিয়ে জাল সনদ দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নেন মনিরুজ্জামান। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে শেষ পর্যন্ত চাকরি হারাচ্ছেন তিনি।
মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা মামলায় কমিশন থেকে সম্প্রতি চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে বিচারিক আদালতে তা দাখিল করা হবে বলে দুদকের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, মনিরুজ্জামান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হবার প্রত্যাশায় বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের বিজ্ঞপ্তির নিয়মাবলী ও শর্ত ভঙ্গ করে অসাধুভাবে প্রতারণার আশ্রয় নেন। এর অংশ হিসেবে আবেদনপত্রে মিথ্যা স্থায়ী ঠিকানা ও বাবা মুক্তিযোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও জাল মুক্তিযোদ্ধা সনদ বানিয়ে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (পিএসসি) দাখিল করেন। আর এ প্রক্রিয়ায় তিনি মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটায় পিএসসির সুপারিশ প্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে পুলিশ ভেরিফিকেশনে ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ এ অংশটি এড়িয়ে যাওয়ার মাধ্যমে ২০১৪ সালের ১১ মে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পদে চাকরি পান।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তার বাবা মো. আব্দুল ছামাদ একজন কৃষক। তিনি কখনোই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। আর মিথ্যা ঠিকানার বিষয়ে তদন্তে দেখা যায় মনিরুজ্জামানের বাবা কখনো মানিকগঞ্জের সেওতা ও ছনক গ্রামে বসবাস করেননি। চাকরি লাভের অসৎ উদ্দেশ্যে বাবাকে মু্ক্তিযোদ্ধা সাজাতে গিয়ে ওই অঞ্চলের ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করে পিসএসসিতে আবেদন করেন। প্রকৃতপক্ষে তার স্থায়ী ঠিকানা হচ্ছে মানিকগঞ্জের জেলার সাটুরিয়া থানার তেবাড়ীয়া গ্রামে।
২০১৪ সালের ১৩ জুলাই মো. মনিরুজ্জামান ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি পেয়েছেন এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। অনুসন্ধানে দুদক উপপরিচালক এস এম গোলাম মাওলা সিদ্দিকী অভিযোগের সত্যতা পান। কমিশনের অনুমোদনক্রমে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি রাজধানীর রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন তিনি।
পরবর্তীতে গোলাম মাওলা সিদ্দিকী তদন্তের দায়িত্ব দেয় কমিশন। সম্প্রতি তিনি অবসরে গেলে উপপরিচালক খন্দকার খলিলুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেয় কমিশন।
ওই কর্মকর্তার সুপারিশক্রমে কমিশন ৪২০/৪৬৮/৪৭১ ধারায় চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেয়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস